| |
               

মূল পাতা মুসলিম বিশ্ব ফিলিস্তিন ইস্যুতে জিহাদ বিরোধীদের একহাত নিলেন মুফতী ত্বকী উসমানী


ফিলিস্তিন ইস্যুতে জিহাদ বিরোধীদের একহাত নিলেন মুফতী ত্বকী উসমানী


মুসলিম বিশ্ব ডেস্ক     11 April, 2025     12:52 PM    


পাকিস্তানসহ সকল ইসলামি সরকারের উপর এই মুহূর্তে জিহাদ করা ফরজ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী আলেম ও পাকিস্তান শরীয়াহ কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি মুফতী ত্বকী উসমানী। একই সাথে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জিহাদ বিরোধীদের একহাত নিয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত এই আলেম। 

তিনি বলেন, আসল করণীয় ছিল আমরা এখানে জড়ো হওয়ার পরিবর্তে গাজ্জায় গিয়ে জড়ো হওয়া। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ফিলিস্তিনি মুজাহিদদের জন্য বাস্তবে কিছুই করতে পারিনি। ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য জান-মাল উৎসর্গ করা পুরো মুসলিম উম্মাহর উপর ফরজ।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ইসলামাবাদে জাতীয় ফিলিস্তিন সম্মেলনে ‍দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে চুক্তির দোহাই দিয়ে জিহাদ বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ৫৫ হাজারেরও বেশি কালেমা পাঠকারী মুসলিমকে জবাই হতে দেখেও কি আপনাদের উপর এখনো জিহাদ ফরজ নয়? অথচ ফিলিস্তিনিদের জন্য জান-মাল লাগিয়ে দেওয়া মুসলিম উম্মাহর সকলের উপর ফরজ। আমাদের সরকার সহ বিশ্বের সকল ইসলামী সরকারের উপর এখন জিহাদ ফরজ হয়ে গিয়েছে।

কেনো এখনো মুসলিম দেশগুলোকে ইসরাইল-আমেরিকার চুক্তি মেনে চলতে হবে এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গাজ্জায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পরও বোমাবর্ষণ চলছে। জায়োনিস্ট ইসরাইল কোনো নৈতিকতা ও আন্তর্জাতিক আইনের ধার ধারছে না। তারা ও তাদের দোসররা কোনো ধর্ম, বিশ্বাস ও চুক্তির মান রাখছে না। উল্টো আমেরিকার অস্ত্র ও সার্বিক সহায়তায় জারজ রাষ্ট্রটি মুসলিম দেশগুলোকে ভীত করে রেখেছে।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল (শুক্রবার) আন্তর্জাতিক মুসলিম উলামা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জারিকৃত ফতোয়াায় বলা হয় : 

১। প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমের উপর ফিলিস্তিনে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদ করা ফরজ।

২। আরব ও মুসলিম মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর জন্য অবিলম্বে সামরিক হস্তক্ষেপ করা ফরজ।

৩। দখলদার ইহুদি রাষ্ট্রকে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ করা ফরজ। সবধরণের জলপথ, প্রণালী এবং আরব-মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর আকাশসীমাও এই হুকুমের অন্তর্ভুক্ত।

৪। জিহাদরত প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস সহ সকল স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র দল) কে আর্থিক, সামরিক, রাজনৈতিক ও মানবিক সহ সর্বক্ষেত্রে সহায়তা করা ফরজ।

৫। উম্মাহর সুরক্ষা ও আক্রমণকারী শত্রুদের প্রতিহত করতে অবিলম্বে ইসলামি সামরিক জোট গঠন করা ওয়াজিব। এটি এমন ওয়াজিব যা অবিলম্বে পালনীয়।

৬। ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপন (স্বীকৃতি ও সহযোগিতা) সম্পূর্ণরূপে হারাম।

৭। ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্রকে পেট্রোল ও গ্যাস সরবরাহ করাও সম্পূর্ণরূপে হারাম।

৮। ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্রের সাথে আরব দেশগুলোর করা শান্তি চুক্তি সমূহ পুনরায় পর্যালোচনা করা জরুরী।

৯। গাজ্জায় আমাদের মুসলিম ভাইদের সহায়তায় আর্থিক জিহাদ করা এবং দ্রুত এর (গাজ্জার) সীমান্ত খুলে দেওয়া ফরজ।

১০। আমেরিকার মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, তারা যেনো ট্রাম্প ও তার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। যেনো তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেন। আগ্রাসন বন্ধ করেন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন।

ফিলিস্তিনে প্রত্যেক সক্ষম ব্যক্তির উপর জিহাদ ফরজ হওয়ার ফতোয়াটি আন্তর্জাতিক মুসলিম উলামা ইউনিয়নের ইজতিহাদ ও ফতোয়া কমিটির ১৫ জন বিশেষজ্ঞ মিলে তৈরি করেন। ফিলিস্তিন, মুসলিম বিশ্বের বাস্তবতা ও শরীয়াহর নিরিখে তারা এই ফতোয়া জারি করেন।

ফতোয়া দাতারা হলেন, শায়েখ মুহাম্মদ হাসান আদ-দিদো, শায়েখ আব্দুল হাই ইউসুফ, শায়েখ ইবরাহীম আবু মুহাম্মদ, শায়েখ খালেদ হানাফি,  শায়েখ আহমদ কাফি, ড. ফরিদা সাদিক জাউজ, শায়েখ মুহাম্মদ গুরমাজ (মেহমেত গরমেজ), শায়েখ মুস্তফা দাদিশ,  শায়েখ সালেম আশ-শায়খী, শায়েখ মাসউদ সাবরী, শায়েখ ওয়ানিস আল-মুবারক, শায়েখ উ’জাইল আন-নাশমী, শায়েখ নুরুদ্দিন আল-খাদেমী, শায়েখ শায়েখ আহমদ হুয়াই, শায়েখ সুলতান আল-হাশেমী।

ওদিকে মিশরের সাথে ইসরাইলের “ক্যাম্প ডেভিড” চুক্তির দোহাই দিয়ে গত ৮ এপ্রিল এই ফতোয়া বাস্তব সম্মত নয় বলে বিরোধিতা করেন মিশরের গ্র‍্যান্ড মুফতী নাজির আইয়াদ। তিনি বলেন,  কোনো ইউনিয়ন বা সংস্থার ফতোয়া জারি করার অধিকার নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।